ঢাকা | মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২

জামিন আবেদন খারিজ খালেদা জিয়ার

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৩

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৩

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ

 

ঢাকা,১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আজ এই আদেশ দেন।
আদেশে আদালত বলেন, সর্বসম্মতিক্রমে জামিন আবেদন খারিজ ( ডিসমিসড) করা হলো। পর্যবেক্ষণে বলা হয়, যদি আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) প্রয়োজনীয় সম্মতি দেন, তাহলে মেডিকেল বোর্ড দ্রুত তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের (বায়োলজিক এজেন্ট) জন্য পদক্ষেপ নেবে, যা বোর্ড সুপারিশ করেছে।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ ।
মাহবুবে আলম বলেন, জামিনের বিরোধিতা করে আমরা বলেছি, তিনি পৃথক মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার খালেদা জিয়ার সর্বাত্মক চিকিৎসা দিচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা আগে থেকেই ছিল। তার হাঁটুতে পূর্বেই অপারেশন হয়েছে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন তাতে দেখা যায় খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়নি।
আজ আদালতে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদনের ওপর এবং তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নাল আবেদীন।
শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল বোর্ডের পাঠানো প্রতিবেদন আদালতের কাছে পেশ করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দেয়া দন্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে হাইকোর্টে জামিন আবেদন খারিজ হলে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। এই জামিন আবেদনের শুনানিতে গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে জানাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মেডিকেল রিপোর্ট ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিন প্রতিবেদন জমা না পড়ায় শুনানি পিছিয়ে আজ ১২ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়। সেই শুনানিতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হলো আজ।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচবছর কারাদন্ড পেয়ে কারাবন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। এ মামলায় হাইকোর্টে আপিলের পর সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে রায় দেয় আদালত। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সে আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
খালেদা জিয়া এখন কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: