
অধিকারপত্র প্রতিবেদক
প্রতিবন্ধী ও অটিজম আক্রান্ত শিশুরা সমাজের বোঝা নয়। সাধারণ শিশুর মত তারও মন চায় চার দেয়ালে ঘেরা বন্দি জীবন থেকে বেরিয়ে নির্মল বিনোদন উপভোগ করতে। মন চায় মাসব্যাপী চলা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শিশুদের বিনোদনের জায়গাগুলো ঘুরতে। বিভিন্ন রাইডে চড়ে সবার সাথে হই হুল্লা আর আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠতে।
হ্যা, বাণিজ্য মেলায় প্রতিবন্ধী শিশুদের এ শখ মিটাচ্ছে সারিকা ফ্যান্টাসি এমাজিং ওয়াল্ড শিশু পার্কটি। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত, অটিজম আর প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনামূল্যে বিনোদনের সুযোগ রয়েছে এখানে। টানা পঞ্চমবারের মতো এবারের মেলায় শিশুদের জন্য এ সুযোগ রেখেছে পার্কটি। বিনামূল্যে বিনোদনের সুযোগ থাকায় এসব শিশুদের কাছে পার্কটি অনেক প্রিয়। কারণ প্রতি বছর অনেক শিশু এখানে এসে সাধারণ শিশুদের সাথে বিভিন্ন রাইড উপভোগ করে।
মেলার পূর্বদিকে ইপিভির কাছাকাছি রয়েছে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের এ পার্কটি। ট্রেন, টু-ইস্ট, নাগরদোলা, হেলিকপ্টার, ঘূর্ণিসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি রাইড। ৩০ টাকায় উপভোগ করা যাচ্ছে এক একটি রাইড। তবে প্রতিবন্ধী ও অটিজম আক্রান্ত শিশুরা বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবে।
গতকাল মঙ্গলবার পার্কটির এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা.দীপু মনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পলাশ। পার্কে ডা. দীপু মনি রাজধানীর ফেসেস স্পেশাল নিডস স্কুলের দশজন প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুর সাথে বিভিন্ন রাইড উপভোগ করেন। এ সময় তিনি শিশুদের মাঝে খাবার, কলম বিতরন করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডা. দীপু মনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার বর্তমানে অনেক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এসব শিশুদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সরকারের একার পক্ষে সুবিধা বঞ্চিত এসব শিশুদের এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে মানুষ আগের চেয়ে বুঝতে শিখেছে যে, এসব শিশুরা সমাজের বোঝা নয়। তারা কোন না কোন ক্ষেত্রে মেধাবী। তারাও সম্পদে পরিণত হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মেলায় এ ধরনের উদ্যোগ সরকারে সার্বিক কার্যক্রমকে বেগবান করবে। সমাজের অধিকার বঞ্চিত শিশুদের জন্য এ ধরনের কার্যক্রম গ্রহন করায় পার্কের কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুুবুর রহমান পলাশ বলেন, সমাজের যেসব শিশু সুবিধা বঞ্চিত তারাও তাদের পিতামাতার কছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুরা সব সময় সমাজের সব কিছু উপভোগ করতে পারে না। বাণিজ্য মেলায় যে শুধু স্বাভাবিক শিশুরা আসে তা নয়, প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুরাও আছে। কিন্ত তাদের জন্য বিশেষ কোনো সুযোগ সুবিধা নেই। এজন্য তাদের বিনোদনের জন্য আমরা এ ব্যবস্থা করেছি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সমাজের প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুদের নিয়ে কাজ করছে। সেটিও আমার এমন উদ্যোগের অনুপ্রেরনা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্লোরী ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল ও বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আখতারুজ্জামন আখতার। তিনি প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুদের চাদর উপহার দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: