ঢাকা | সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২
'তখন সবাই চিৎকার করছিল আর দোয়া পড়ছিল'- নেপালে বিধ্বস্ত বিমান থেকে বেঁচে ফেরা বাংলাদেশি একজনের অভিজ্ঞতা

'তখন সবাই চিৎকার করছিল আর দোয়া পড়ছিল'- নেপালে বিধ্বস্ত বিমান থেকে বেঁচে ফেরা বাংলাদেশি একজনের অভিজ্ঞতা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৮

'তখন সবাই চিৎকার করছিল আর দোয়া পড়ছিল'- নেপালে বিধ্বস্ত বিমান থেকে বেঁচে ফেরা বাংলাদেশি একজনের অভিজ্ঞতা

  • ১৩ মার্চ ২০
নেপালের একটি হাসপাতালে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের স্বজনরা
Image captionনেপালের একটি হাসপাতালে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের স্বজনরা

''দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের ঢাকা থেকে আমরা টেক অফ করি। আড়াইটার দিকে কাঠমান্ডু পৌঁছে পাইলট প্রথমে ল্যান্ড করার চেষ্টা করে। কিন্তু পারেনি। পরে ঘুরে ঘুরে আবার যখন দ্বিতীয়বার ল্যান্ড করার চেষ্টা করে, বাম দিকটা উঁচু হয়ে যায়। তখনি আমি বললাম, বাম দিকটা উঁচু হল কেন, আর তখনি ক্রাশ হয়ে গেল।''

বিবিসি নেপালি সার্ভিসকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে সেই দুর্ঘটনার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে যাওয়া শাহরীন আহমেদ।

একটি দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, এরকম সতর্কবার্তাও পাইলট, কেবিন ক্রু বা অন্য কেউ দেয়নি। তারা নিজেরাও কিছু বুঝতে পারেননি।

মিজ আহমেদ বলছেন, ''তখন সবাই ভয়ে চিৎকার করছিল আর আল্লাহর কাছে দোয়া পড়ছিল।''

এর আগে কি আপনাদের কোন আভাস দেয়া হয়েছিল? আপনার কিছু টের পেয়েছিলেন?

শাহরীন আহমেদ বলছেন, ''একেবারে স্বাভাবিকভাবেই বিমানটি নামছিল। একদম হঠাৎ করে সবকিছু হয়ে গেল।''

একজন বন্ধুর সঙ্গে সোমবার নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন ঢাকার একটি স্কুলের শিক্ষক ২৯ বছরের শাহরীন আহমেদ।

 

 

দুর্ঘটনায় হতাহতদের বেশ কাঠমান্ডুর বেশ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
Image captionদুর্ঘটনায় হতাহতদের বেশ কাঠমান্ডুর বেশ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে

শুক্রবারই আবার তাদের ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই বন্ধু দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

প্রথমবারের মতো তারা নেপালে বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের পোখারা যাবার কথা ছিল।

তিনি বলছেন, ''আগুন লাগার পর আনুমানিক প্রায় বিশ মিনিট পর সাহায্য আসে। সে পর্যন্ত আমি আর আরেকজন বিমানের ভেতরেই বসে ছিলাম। প্রচণ্ড ভয় লাগছিল আর হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিলাম। কারণ আমি জানতাম,আগুন লাগার পর অনেকে দমবন্ধ হয়েই মারা যায়।''

উদ্ধারকারীরা আগুন নেভানোর পর জাহাজের একটি অংশ খুলে যায় আর বাইরে থেকে পরিষ্কার বাতাস ভেতরে আসতে শুরু করে।

বাইরে আসার সময় তিনি দেখতে পান যে, আরেকজন কাছেই বিমানের ফ্লোরে পড়ে ছিল, তার হাত ঝুলছিল। তিনি বেচে আছেন কিনা, শাহরীনের তা জানা নেই।

ওই দুর্ঘটনার পর একেবারেই সচেতন ছিলেন শাহরীন আহমেদ। লোকজন তাকে ধরে বাইরে নিয়ে আসে। তখন আমি বলি, আমি হাটতে পারবো। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত হেটেও আসি। কিন্তু তখন পায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। আসতে আসতে শুধু আগুন দেখতে পাই।

তার শরীরের অনেক জায়গায় আগুনে পুড়ে গেছে। বর্তমানে কাঠমান্ডুর মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিজে বেঁচে ফিরলেও, হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও বন্ধুর জন্য তার দুঃখ রয়ে গেল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: