✍️ বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে রাজধানীর শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কোনো নেতা সরাসরি অংশ নেননি। বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
সোমবার (তারিখ অনুযায়ী) ইনকিলাব মঞ্চের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সভায় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে বিএনপির কোনো প্রতিনিধি মঞ্চে না থাকলেও আয়োজকদের জানানো হয়, দলটি কর্মসূচির প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে।
বিএনপি কেন সরাসরি অংশ নেয়নি
দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়াতেই বিএনপি সরাসরি সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিশেষ করে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস যে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন, সেটি দলীয় নেতৃত্বকে সতর্ক করেছে।
বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা ছিল—
- সভায় উস্কানিমূলক বা বিতর্কিত বক্তব্য আসতে পারে
- অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায় রাজনৈতিকভাবে বিএনপির ওপর পড়তে পারে
- চলমান নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে

এ কারণে দলটি রাজপথে উত্তেজনা না বাড়িয়ে সতর্ক কৌশল বেছে নিয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানায়।
সভায় বিতর্কিত বক্তব্যে নতুন আলোচনা
প্রতিবাদ সভায় কয়েকজন বক্তার বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কড়া ভাষার বক্তব্য এবং এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য সভার মূল ইস্যুকে ছাপিয়ে যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের বক্তব্যের দায় নিতে না চাওয়াই বিএনপির অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ।
বিশ্লেষকদের মূল্যায়ন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভিজ্ঞতা থেকেই বিএনপি অনুমান করেছিল—এই সভায় বক্তব্যের ধরন রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ফলে দলটি সরাসরি অংশ না নিয়ে কৌশলগতভাবে সংহতি প্রকাশ করেছে।
একজন বিশ্লেষকের ভাষায়, “বিএনপি এই মুহূর্তে কোনো অস্থির পরিস্থিতি চায় না, যা নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।”
সার্বিক চিত্র
সব মিলিয়ে, ওসমান হাদি ইস্যুতে সহানুভূতি ও সংহতি বজায় রেখেও রাজপথের উত্তাপ থেকে দূরে থাকার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। দলটির লক্ষ্য—রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং নির্বাচনী পরিবেশ যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: