ঢাকা | সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ার পর তারা এখন গতির স্বাদ নিতে ইচ্ছুক

gazi anwar | প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০১৮ ১৭:৪২

gazi anwar
প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০১৮ ১৭:৪২

 

 

সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ার পর তারা এখন গতির স্বাদ নিতে ইচ্ছুক। তারা বিভিন্ন ধরনের দ্রুত গতির গাড়ি চালনায় আগ্রহী হয়ে উঠছে।
মাথায় হেলমেট পরে রুপালি রঙের স্পোর্টস গাড়িতে চড়ে রানা আলমিমোনি রিয়াদের একটি পার্কে এই গাড়ি চালানোর কৌশল রপ্ত করছেন। ইঞ্জিনের আওয়াজ হচ্ছে, চাকা মাটিতে ঘষা খাচ্ছে ও গাড়ির পেছনটা ধূলার মেঘে ঢাকা পড়ছে।
কয়েক সপ্তাহ আগেও সৌদি নারীদের কাছে এ দৃশ্য অকল্পনীয় ছিল। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
কট্টর রক্ষণশীল দেশটিতে নারী গাড়ি চালকদের জন্য মাথা ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক।
৩০ বছর বয়সী আলমিমোনি মোটরগাড়ি চালাতে খুবই উৎসুক। নারীরা সুন্দর উজ্জ্বল রঙের গাড়িই পছন্দ করছে।
আলমিমোনি বলেন, ‘আমি খুব দ্রুত গাড়ি চালাতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি ৫শ’ হর্সপাওয়ারের চেয়েও দ্রুত গতির গাড়ি চালানোর স্বপ্ন দেখি।’
রিয়াদের দিরাব মোটর পার্কে তিনি তার মসৃন রুপালী রঙের কিয়া স্টিঙ্গার এর এক্সেলেটরে চাপ দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয় যে সৌদি নারীরা শুধু গোলাপি ও সুন্দর গাড়ি পছন্দ করেন।’
আলিমিমোনি সরকারের নারীদের ‘রেসিং লাইসেন্স’ দেয়ার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন। তখন তিনি মোটর স্পোর্টস কম্পিটিশনে যোগ দিতে পারবেন।
এখন দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো সমকালীন সৌদি নারীদের ঝোঁকে পরিণত হয়েছে। এর আগে পুরুষরা এভাবে গাড়ি চালাত।
গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষক ফালাহ আল-জারবা বলেন, ‘অধিকাংশ নারীরা কিভাবে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো যায় সেই কৌশল রপ্ত করতে আসেন। তারা আমাদের কাছে জানতে চান কোন গাড়ি তারা এভাবে চালাতে পারবেন, তাদের এটা শিখতে কতদিন লাগবে।’
সৌদি আরবের জাতীয় মোটর ফেডারেশনের প্রথম সদস্য আসিল আল-হামাদ অনেক নতুন নারী গাড়ি চালকদের প্রেরণা।
তিনি সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া উপলক্ষ্যে জুন মাসে ফ্রান্সে ফর্মূলা ওয়ান রেসিং কারে বসেছিলেন।
টাইট জিন্স ও হার্লেই-ডেভিডসন টি-শার্ট পড়া বেশ কয়েকজন নারী রিয়াদের একটি ড্রাইভিং স্কুলে মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
যেসব নারী প্রথমবার গাড়ি চালাচ্ছে সৌদি আরবের পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাদের সহায়তা করছে।
৫৭ বছর বয়সী রিয়াদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নাগওয়া মুসা বলেন, ‘আমার মনেই হচ্ছে না যে আমি সৌদি আরবে আছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমি সৌদি আরবের রাস্তায় নারীদের ওভারটেক করা দেখতে চাইনা।’
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর কৌতুকশিল্পী ইয়াসের বাকর টুইটারে বলেন, ‘আমাকে অভিনন্দন জানান, যে আমি শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবে একজন নারীকে গাড়ি চালাতে দেখলাম। যদিও তিনি বাহরাইনী। কিন্তু তিনি সৌদি আরবে গাড়ি চালাচ্ছেন।’
এই মুহূর্তে যেসব নারীর বিদেশী লাইসেন্স রয়েছে, তারাই কেবল সৌদি আরবে গাড়ি চালাতে পারছেন। তবে এর জন্য তাদের একটি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
অনেকেই পুরুষদের তুলনায় নারীদের গাড়ি চালাতে বেশি ফি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া প্রশিক্ষণকেন্দ্রেগুলোতে নারী প্রশিক্ষক অপ্রতুল।
ওয়াশিংটনে আরব গাল্ফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের ক্রিস্টিন ডিওয়ান বলেন, ‘সৌদি সরকার সৌদি নারীদের জন্য বিনোদনের সুযোগ বাড়াচ্ছেন, কিন্তু রাজনীতিতে নারীদের অবস্থান বাড়ছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘নারীরা দ্রুততার উত্তেজনা অনুভব করতে পারলেও তাদের বাক স্বাধীনত নেই।’
মে মাস থেকে সৌদি আরবে আট নারীসহ অন্তত ১২ মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: