ঢাকা | সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

সিরাজদিখানে “লাইলী মা” নামে প্রতারণার ব্যবসা জমজমাট!

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৪৭

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৪৭


সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
৪০-৪৫ বছর পূর্বে নারায়নগঞ্জের সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় লাইলী পাগলী
নামে এক মহিলা ছিলেন। তাকে মানুষজন লাইলী পাগলী বলে ডাকতেন। তিনি
অধ্যাতিœক গুনে গুনান্বিত ছিলেন। তিনি মানুষের মুখ দেখেই তার সবকিছু বলে
দিতে পারতে বলে অনেকের মুখে শোনা যেত। মানুষের মুখ দেখে সবকিছু বলে দিতে
পারতেন বিধায় মানুষজন তার কাছে গিয়ে অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্তি
পেয়েছে বলেও এখনো মানুষের মুখে শোনা যায়। আর একারণেই তাকে মানুষ
এখনো মনে রেখেছেন। অনুমান ১২ থেকে ১৩ বছর পূর্বে তিনি মৃত্যু বরণ করার পর
ওই এলাকায় তার নামে একটি মাজার তৈরি হয়। ওই লাইলী পাগলীর নামে উপর
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বেশ কয়েকজন লাইলীর মা সেজে পুরুষ থেকে
নারী বনে গিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। উপজেলার
ইছাপুরা ইউনিয়নের চালতাতলা গ্রামের সাত্তার মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তি লাইলীর
মা সেজে বিভিন্ন রোগের চিকিকৎসার নাম করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে
নিচ্ছে টাকা। এমনকি চিকিৎসার নামে মেয়েদের স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দিয়ে
শ্লীলতাহানীর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
একটি ঘরের ভিতর বিভিন্ন পীর আওলিয়ার ছবি টাঙিয়ে ফুল আর মালা দিয়ে
সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অপর একটি ঘরে লাইলী পাগলীর ছবি টাঙিয়ে তৈরি করা
হয়েছে ছোট পরিসরে আসর। যে খানে মানুষজন চিকিৎসা করতে গেলে
ধর্মবিরোধী কার্যকালাপ করানো হয় বলেও অভিযোগ অনেকের।
এ বিষয়ে সাত্তার মিয়া (কথিত লাইলীর মা) বলেন, আমি এভাবে কারো পেট ব্যাথা
হলে চিকিৎসা করি। কারো মাথা ব্যাথা থাকলে চিকিৎসা করি। বাচ্চরা ভয় পেলে
তাদের ভয় কাটানোর জন্য চিকিৎসা করি। এছাড়া জি¦ন ভূতে ধরা মানুষদের
চিকিৎসাও করি। মেয়েদের স্পর্স কাতর স্থানে হাত/পা দিয়ে অশ্লীল ভাবে চিকিৎসা
করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন মেয়ের পেট ব্যাথা থাকলে মেয়েদের
নাভীতে পা দিয়ে আমি চিকিৎসা করি। এ পর্যন্ত অনেকেই ভালো হয়েছে।
আপনারা যদি বলেন তাহলে আমি এ ধরনের চিকিৎসা বা এ ধরনের কাজ করবো না।
ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন হাওলাদার বলেন, লাইলী পাগলীকে
আমি দেখি নাই। আর এটা আমাদের ইসলামীক দৃষ্টিতে অত্যান্ত একটা অপরাধের
জগৎ। যারা সমাজ ধর্ম ও অন্যায় বোঝেনা তারাই ঐখানে গিয়ে মনে করেন তাদের
রোগ ভাল হয়ে যাবে। আসলে এখানো কোন রোগ বালাই ভালো হওয়া সম্ভব না।
মানুষের সমস্যা থাকতেই পারে সে জন্য ডাক্তার রয়েছে। এগুলো ভন্ডামী ছাড়া আর
কিছুই না। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই তারা যেন এ সমস্ত
প্রতারকদের প্রতারণা বন্ধ করে দেয়। প্রয়োজনে আমি তাদের সাহায্য করবো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: