আর তারা দুজন হলেন ইতিহাসের পঞ্চম দম্পতি, যারা একই বছর একসঙ্গে একই বিষয়ে নোবেল পেয়েছেন।
ফরাসি বংশোদ্ভূত এস্তার ডুফলো এবং তার ভারতীয় বাঙালি স্বামী অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জির সঙ্গে এবারের সভেরিজেস রিক্সব্যাঙ্ক পুরস্কার (আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির উদ্দেশে প্রবর্তিত অর্থনীতির সম্মাননা) ভাগ করে নেবেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বলছে, দারিদ্র্য বিমোচনের পথ খুঁজতে উন্নয়ন অর্থনীতির গবেষণার ধরণই বদলে দিয়েছেন এই তিন অর্থনীতিবিদ।

প্যারিসে ইতিহাস আর অর্থনীতিতে পড়া ডুফলো ১৯৯৯ সালে এমআইটিতে এসে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। এখন ৪৫ বছর বয়সে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সী নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তার আগে ২০০৯ সালে প্রথম নারী হিসেবে অর্থনীতির নোবেল পেয়েছিলেন এলিনর ওসট্রম।
২০০৩ সালে সেন্ধিল মুল্লাইনাথানের সঙ্গে মিলে আব্দুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন ডুফলো। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি আমেরিকান ইকনোমিক রিভিউ সম্পাদনা করছেন।
কলকাতার ছেলে অভিজিৎ ব্যানার্জির সঙ্গে ফরাসী এস্তার ডুফলোর পরিচয় এমআইটিতেই। এক সঙ্গে কাজ করতে করেতেই ২০১৫ সালে তাদের বিয়ে।
৫৮ বছর বয়সী অভিজিৎ পড়ালেখা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ডে পিএইচডি করেন।
এখন তিনি এমআইটিতে অর্থনীতি পড়াচ্ছেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর হিসেবে। অভিজিতের আগে ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছেন।

অভিজিতের বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ও কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতি পড়িয়েছেন। আর মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ অব সোশাল সায়েন্সেসের সাবেক ডিরেক্টর।
ইনডিয়ান এক্সপ্রেসকে নির্মাল বলেন, পড়াশোনা করতে ১৯৮৩ সালে দেশ ছাড়ার পর বাইরে বাইরেই থেকেছেন অভিজিৎ।
“কী খেলে, কেমন আছ, এসব কথা আমাদের প্রায় হয়ই না। ওর কাজ নিয়েই কথা হয়। সারা বিশ্বের দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে কাজ করছে ও। সে সব নিয়েই কথা হত।”
নির্মলা যখন সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছেলেরর ফোন আসে। অনুযোগের সুরে মা বলেন, “কাল যখন ফোন করলে, কিছু বললে না তো, এখন আমায় লোকে পাগল করে দিচ্ছে।”
এস্তার ডুফলো আর অভিজিৎ ব্যানার্জির অর্থনীতির গবেষণার একটি বড় ক্ষেত্র ভারত। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে তারা দারিদ্র্যের কারণ বুঝতে চেষ্টা করেছেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, ছোট ছোট পর্যায়ে বিষয়গুলো ভাগ করে কাজ করলে দারিদ্র্য দূর করা অনেক সহজ হতে পারে
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: