
১০ বছরের শিশু কন্যার ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে অপহরণকারীদের। তারা জোরপূর্বক আটকে রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরিবারের কাছে চায় মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে তারা পর্যন্ত ওই শিশুকে লাখ টাকায় দালালের কাছে বিক্রি করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়।
মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে র্যাব অপহরণকারীদের সিলেটের আস্তানার খোঁজ পায়। বুধবার ভোররাতে তারা সিলেটের নিশ্চিন্তপুরে অভিযান চালিয়ে শিশুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। একই সঙ্গে অপহরণকারী চক্রের সদস্য তাহের আলীকেও গ্রেপ্তার করে। আর গ্রেপ্তারের পর র্যাবের কাছে সে অপহরন ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
উদ্ধারের পর ওই শিশুটিও র্যাবের কাছে তার উপর চলা নির্যাতনের কথা জানিয়েছে। তাদের নির্যাতনে শিশুটি আহত হয়ে পড়েছে বলে জানায় র্যাব। ১০ বছর বয়সী ওই শিশুটির বাড়ি গাজীপুরের চান্দুরা এলাকায়। গত ২৯ শে অক্টোবর শিশুটি তার নানীর সঙ্গে মার্কেটিং করতে গাজীপুরের চান্দুরা চৌরাস্তা এলাকায় আসে। এ সময় দুই যুবক কথার ছলে নানী ও নাতনীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এবং তারা নাস্তা করার জন্য নানীকে নাতনী সহ হোটেলে আমন্ত্রন জানায়। এ সময় নানী তাদের কথায় রাজি হয়ে পার্শ্ববর্তী একটি হোটেলে নাতনিকে নিয়ে ওই দুই যুবকের সঙ্গে চলে যান। গিয়ে তারা নাস্তাও করেন। এ সময় ওই দুই যুবক কৌশলে নাস্তার সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ সেবন করায়। এতে নানি ও নাতনী দু’জনই অচেতন হয়ে পড়েন। বেশ কিছু সময় পর নানির জ্ঞান ফিরলে দেখেন তার নাতনী নেই। সঙ্গে থাকা মোবাইল ও টাকা পয়সা নেই। এ সময় তিনি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আশপাশের এলাকায় তাদের খুঁজেন। কিন্তু পাননি। অবশেষে নানী তার নিজের মোবাইল নাম্বারে অন্য একজনের মোবাইল দিয়ে ফোন। এ সময় অপহরনকারীরা নানীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন রিসিভ করে। এ সময় তারা জানায়- তার নাতনীকে অপহরন করা হয়েছে। দুই লাখ টাকা মুক্তিপন দিলে ছেড়ে দেবে। নতুবা নাতনীকে খুন করার হুমকি দেয় অপহরনকারীরা।
এ ঘটনায় নানি বাদী হয়ে গত ৭ই নভেম্বর গাজীপুরের বাসন থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অপহরনকারীদের আসামি করেন। র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-অধিনায়ক মেজর শওকাতুল মোনায়েম জানান- মোবাইল ট্র্যাকিং করে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বুধবার ভোররাতে দক্ষিণ সুরমার নিশ্চিন্তপুরে অভিযান চালিয়ে তাহের আলী নামের অপহরণকারীকে আটক করে র্যাব। এ সময় অপহৃত শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর শিশুটি জানায়, তাকে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণও করা হয়েছে। অপহরণকারীরা তাকে এক লাখ টাকায় বিক্রিরও চেষ্টা করেছে। আটক তাহের আলীকে গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। ওই শিশুটিকে আটকে রেখে ধর্ষণও করেছে। তাকে এক লাখ টাকায় বিক্রিরও চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিশুটি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: