odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

মাশরাফি, তামিমের পর মোস্তাফিজ

Admin 1 | প্রকাশিত: ১৩ June ২০১৭ ১৫:২৪

Admin 1
প্রকাশিত: ১৩ June ২০১৭ ১৫:২৪

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই একটা সময় তাকিয়ে থাকা হতো মাশরাফি বিন মুর্তজার দিকে। ২০০৭ বিশ্বকাপের পর সেই দৃষ্টি পড়ে তামিম ইকবালের ওপর। আর এখন ভারত ম্যাচ মানেই মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজ ‘ব্যাটন’টা হাতে পান অভিষেক ওয়ানডেতে। ২০১৫ সালের এই জুনেই ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট, পরের ম্যাচে পান ৬টি। দুই ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ মোস্তাফিজ তৃতীয় ওয়ানডেতে নেন আরও ২ উইকেট। ভারতকে ২-১ ব্যবধানে হারানো ওই সিরিজে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কারও উঠেছিল মোস্তাফিজের হাতে।
এরপর গত দুই বছরে ওয়ানডেতে ভারতের মুখোমুখি হয়নি বাংলাদেশ দল। মোস্তাফিজ বনাম ভারত লড়াইও তাই মঞ্চস্থ হয়নি। ভারত কাটা পড়েনি ‘কাটারে’। সেই লড়াই আবারও দেখার সুযোগ মিলবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে। ভারত ম্যাচের আগে সব আলো তাই মোস্তাফিজের ওপর। এমন নয় যে, টুর্নামেন্টে খুব সাফল্য পাচ্ছেন তিনি। তিন ম্যাচে উইকেট মাত্র একটি! তবু ম্যাচটি ভারতের বিপক্ষে বলেই আলোচনায় মোস্তাফিজ আর তাঁর তূণের যত তির।
আইপিএলে খেলার সুবাদে অনেক ভারতীয়র মনে হয়তো আলাদা একটু জায়গা আছে বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসারের জন্য। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল সম্পর্কের সেই আবহে নির্ঘাত লু হাওয়া ছড়িয়ে দেবে। দুই বছর আগের তিক্ত স্মৃতি মনে করে ভারতীয়দের ‘হোমওয়ার্কে’ মোস্তাফিজ-বিষয়ক অধ্যায়টাই বেশি করে পড়ানোর কথা এখন। হতে পারে কোহলি-রোহিতদের হয়তো একটা করে কাগজ ধরিয়ে দিয়েছেন কোচ অনিল কুম্বলে। যাতে লেখা, ‘যেভাবে খেলতে হবে মোস্তাফিজের কাটার।’
কিন্তু ১৫ জুনের কাঙ্ক্ষিত সেমিফাইনালের আগে মোস্তাফিজ কী বলছেন? ভারতের বিপক্ষে আবারও বল হাতে নেওয়ার মুহূর্তটা কি আসলেই তাঁর জন্য বাড়তি শিহরণ নিয়ে অপেক্ষা করছে? এ ম্যাচ কি সত্যিকার অর্থেই বিশেষ কিছু?
আড্ডার চনমনে মোস্তাফিজ আনুষ্ঠানিক প্রশ্নের সামনে বরাবরই আড়ষ্ট। বল ‘ডেলিভারি’ করা যতটা সহজ, ঠিক ততটাই যেন কঠিন শব্দের ‘ডেলিভারি’! কাল বার্মিংহামের টিম হোটেলের সামনেও ভারত প্রসঙ্গে সেই মোস্তাফিজকেই খুঁজে পাওয়া গেল। কোনো রোমাঞ্চ-শিহরণের অস্তিত্ব তাঁর কথায় নেই, ‘সব সময় যেটা ভাবি, সেটাই করার চেষ্টা করি। বেশি কিছু না। বোলিংয়ে যেটা আমার বিশেষত্ব সেটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
তার মানে তো কাটার! কিন্তু একটু পর মোস্তাফিজই আবার বললেন, ‘আমার কাটার বলটা দেশের উইকেটে বেশি ভালো হয়। এখানে অত বেশি হচ্ছে না। তা-ও আমি চেষ্টা করছি ভালো করার।’ চেষ্টাটা আছে সবার মধ্যেই। সেটা বলতে গিয়ে মোস্তাফিজ নিজেকে ছাড়িয়ে হয়ে গেলেন দলের প্রতিনিধি, ‘একটা বিশ্বাস আমাদের সব সময় আছে। যদি সবার সময় ভালো যায় আশা করি ভালো কিছু করব।’
বাংলাদেশের বাইরে সম্ভবত ইংল্যান্ডেই সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি দর্শক-সমর্থক। যে শহরেই যাচ্ছেন, মোস্তাফিজরা সেটা বেশ ভালোই উপলব্ধি করছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে দল। মোস্তাফিজের কণ্ঠেও সেই আর্দ্রতা, ‘যাঁরা আসেন সবাই তো দেশের খেলা হচ্ছে বলেই আসেন। আমাদের ভালোবাসেন। আমরাও চেষ্টা করি তাঁদের সম্মান রাখার জন্য।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই এক জয়ই মাথা উঁচু করে দিয়েছে ইংল্যান্ডে থাকা বাংলাদেশিদের। সেমিফাইনাল দিচ্ছে আরও বড় কিছুর ডাক। মোস্তাফিজের কথায় মনে হলো, দলের সবাই সবার ফর্মটা ধরে রাখতে পারলে ভারতও বড় বাধা হবে না, ‘আমরা সেমিফাইনালে উঠতে পেরেছি, কারণ যার যার জায়গা থেকে সবাই কমবেশি ভালো করেছে। এখন ভারতের সঙ্গে সেমিফাইনাল। সবাই বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে।’
শেষ কথাতেই পরিষ্কার—মাশরাফি, তামিমের পর এখন ভারত ম্যাচে বিশেষ করে চোখ থাকবে মোস্তাফিজের ওপর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: