odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে ঘর ছেড়েছিলেন ৭ তরুণ : র‌্যাব

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৭ October ২০২২ ০৬:৪৪

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৭ October ২০২২ ০৬:৪৪

জঙ্গি সম্পৃক্ততায় কথিত হিজরতের নামে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৪ জনসহ গ্রেফতারকৃত ৭ তরুণ সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে ঘর ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব জানায়, তারা ভোলা ও পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এরা নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।
আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা জানান।
তিনি জানান, বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৭ জনকে মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পটুয়াখালীর আবু তাহেরের ছেলে হোসাইন আহম্মদ (৩৩), মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মো. নেছার উদ্দিন ওরফে উমায়ের (৩৪), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে বণি আমিন (২৭) এবং নিরুদ্দেশ ৪ তরুণ, কুমিল্লা জেলার ফয়েজ আহমেদের ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত (১৯), মো. সাহাব উদ্দিনের ছেলে মো. হাসিবুল ইসলাম (২০), গোপালগঞ্জের আনিছ শিকদারের ছেলে রোমান শিকদার (২৪) ও পটুয়াখালীর হাসান মীরের ছেলে মো. সাবিত (১৯)।
তাদের কাছ থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের ৩ ধরনের প্রচারপত্র, বিস্ফোরক তৈরির নির্দেশিকা সম্বলিত বই, নব্য জঙ্গি সংগঠনের কর্মপদ্ধতি, উগ্রবাদী বই  ‘নেদায়ে তাওহীদ’ ও  জিহাদি উগ্রবাদ ভিডিও সম্বলিত একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার মঈন বলেন, হোসাইন আহম্মদ পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। তার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান,  নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের কিছু সদস্যদের একীভূত করে ২০১৭ সালে এই নব্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সংগঠনটি ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) নামকরণ করা হয়।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লার সদর এলাকা থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব তাদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা ঘর ছেড়েছে বলে জানান মঈন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান ও ভিডিও দেখানো হতো। এভাবে তাদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা হয়। সোহেল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে কুমিল্লা থেকে ঘর ছাড়া তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পটুয়াখালী ও ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। নিখোঁজ তরুণদের বিভিন্ন সেইফ হাউজে রেখে পটুয়াখালী এলাকার সিরাজ ওরফে রবি নামে এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে পটুয়াখালী ও ভোলার বিভিন্ন চর এলাকায় সশস্ত্র হামলা, বোমা তৈরি, শারীরিক কসরত ও জঙ্গিবাদ বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া যুবক শারতাজ ইসলাম ওরফে নিলয় (২২) জানান, খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে কথিত হিজরতের উদ্দেশে বাসা ছেড়েছিলেন তিনি। পরে তিনি তার ভুল বুঝতে পারেন। হিজরতকালে পটুয়াখালী থেকে পালিয়ে বাসায় ফিরে আসেন তিনি।
জঙ্গিবাদে জড়ানো সম্পর্কে শারতাজ বলেন, ‘এটা একটা ভুল পথ। কোনো কিছু করার আগে জেনে বুঝে করা উচিত। কেউ আমার মতো না বুঝে এমন ভুল করবেন না।’
শারতাজ বলেন, পরিবার ছেড়ে কথিত হিজরতে যাওয়ার পর তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারেন। তাই সেখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। সুযোগ বুঝে তিনি পালিয়ে বাসায় ফিরে আসেন।
শারতাজ বলেন, ‘আমি চার থেকে পাঁচ দিন হিজরতে ছিলাম। তার মধ্যেই বুঝতে পারি, এটা ভুল পথ। আসলেই এটা ভুল পথ। এই ভুল পথে কেউ যাতে পা না বাড়ায়, সেই অনুরোধ আমি জানাই।’
গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণ নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে শারতাজ ছিলেন। তিনি গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কল্যাণপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন। 
শারতাজের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সাতজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: