odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

নেইমার কেন ভিলেন?

gazi anwar | প্রকাশিত: ৩ August ২০১৭ ১৫:৫৯

gazi anwar
প্রকাশিত: ৩ August ২০১৭ ১৫:৫৯

নেইমার এখন আর বার্সেলোনার কেউ নন। ব্রাজিলীয় তারকা ন্যু ক্যাম্প ছাড়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা। তাঁদের কণ্ঠে উঠেছে ‘নেইমার বিশ্বাসঘাতক’ স্লোগান। আসলেই কি তাই?
চরম পেশাদার এই যুগে খুব কম খেলোয়াড়ই আছেন, যাঁরা এক ক্লাবে কাটিয়ে দেন গোটা ক্যারিয়ার। ‘ফেলো কড়ি মাখো তেলে’র এই যুগে ক্লাবের প্রতি বিশ্বস্ততা এখন প্রায় হারিয়ে যাওয়া এক ব্যাপার। তেমন কিন্তু ফুটবলে আছে। লিওনেল মেসিই তো এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। মেসি যেমন বার্সায় জীবন কাটিয়ে দিলেন, ঠিক তেমনি সার্জিও রামোস—রিয়াল-অন্তঃপ্রাণ। কয়েক বছর আগেও ইন্টার মিলানের আইকন ছিলেন হাভিয়ের জানেত্তি। ৬১৫ ম্যাচ খেলেছেন নেরাজ্জুরিদের হয়ে। রিয়াল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবা বায়ার্ন মিউনিখের মতো বড় ক্লাবে খেলার লোভনীয় সব প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছেন অবলীলায়। কারণটা স্রেফ ইন্টারের জন্য ভালোবাসা।
গেল মৌসুমেও রোমার আক্রমণের প্রাণভোমরা ছিলেন ফ্রান্সেসকো টট্টি। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘স্কুলে শিখিয়েছিল, মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার পরিবার। রোমা আমার পরিবার। কখনো শুনেছেন, কেবল ধনীদের সঙ্গে থাকার জন্য কেউ দরিদ্র মা-বাবাকে ছেড়ে গেছে?’
উদাহরণ হতে পারেন আরেক ইতালীয় আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরোও। ২০০৬ সাল, ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারি, অবনমনে পড়ে জুভেন্টাস। ক্লাব ছেড়ে গিয়েছিলেন ইব্রাহিমোভিচ, ফাবিও ক্যানাভারোর মতো তারকারা। অথচ রিয়াল মাদ্রিদে খেলার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দেল পিয়েরো। কেন? ‘একজন অভিজাত লর্ড দুঃসময়ে তাঁর লেডিকে ছেড়ে যান না।’ জুভেন্টাসের ডাকনাম যে ‘তুরিনের ওল্ড লেডি’! 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রায়ান গিগস কিংবা লিভারপুলের হয়ে স্টিভেন জেরার্ড—এঁরা সবাই নিজের ক্যারিয়ারের চেয়ে ক্লাবকে প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। জেরার্ড তো নিজের শেষকৃত্যই করতে চেয়েছেন অ্যানফিল্ডে। এ কারণেই তাঁরা হয়ে উঠেছেন ক্লাবের চেয়েও বড়। ‘মিস্টার আর্সেনাল’ টনি অ্যাডামস যেমনটা বলেছিলেন, ‘জার্সির সামনের নামটার জন্য খেলো, তবেই সবাই জার্সির পেছনের নামটা মনে রাখবে।’
নেইমার অতটা মহৎ হননি। ব্যক্তিগত লক্ষ্যকে সামনে রেখে পাড়ি দিতে চলেছেন প্যারিসে। বার্সেলোনাসহ ফুটবল দুনিয়ায় তাই নেইমারের দলবদল নিয়ে বিতর্ক হয়তো চলবে আরও কিছুদিন। কিন্তু যে কটা দিন খেলেছেন, নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। তিন বছরে গোল করেছেন ১০৫টি। এই তো কিছুদিন আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগে অলৌকিকভাবে পিএসজিকে বিদায় করে দিয়েছিল বার্সা। সে ম্যাচেই শেষ সাত মিনিটে ৩ গোল বের করেছিলেন নেইমার। দুটি নিজে করেছিলেন, একটি করিয়েছিলেন সার্জি রবার্তোকে দিয়ে।
বিদায়বেলায় সম্মানটাও তাই প্রাপ্য ব্রাজিল অধিনায়কের!



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: