মেডিকেলের নবাগতদের ছাত্র শিবিরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
অধিকার পত্র ডটকম (সংগঠন ডেস্ক)
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট (কেআইবি) মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে প্রথম বর্ষের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য এক অভ্যর্থনা ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের প্রায় সাড়ে নয়শ’ নবীন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নতুন শিক্ষার্থীদের মাঝে ছিল দারুণ উৎসাহ–উদ্দীপনা। সংগঠকদের মতে, চিকিৎসা শিক্ষার শুরুতেই সঠিক দিকনির্দেশনা তরুণ প্রজন্মকে মানবসেবায় আরও অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও আলোচকদের বক্তব্য
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র শিবির মেডিকেল জোন শাখার সভাপতি ডা. যায়েদ আহমাদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাকসুর ভিপি মুহা. আবু সাদিক (কায়েম) এবং বিএমইউর রেসিডেন্ট (অর্থোপেডিক্স) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান।
সঞ্চালনায় ছিলেন মেডিকেল জোনের সেক্রেটারি ডা. জুলফিকার আলী।
ইন্টিগ্রেটেড কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের সুবিধা
প্রধান আলোচক ডা. কানিজ ফাতেমা (রিফাত) বলেন—
“এখনকার ইন্টিগ্রেটেড কারিকুলামে অ্যানাটমি–ফিজিওলজি–বায়োকেমিস্ট্রির সমন্বিত শিক্ষা শিক্ষার্থীদের বড় সুবিধা দিচ্ছে। আমাদের সময় যেটা কঠিন ছিল, এখনকার শিক্ষার্থীরা সেই কনসেপ্ট সহজেই বুঝতে পারছে।”
তিনি নবীনদের মানবিক চিকিৎসক হওয়ার আহ্বান জানান।
বৈষম্য, সিট-সংকট ও অতীতের ক্যাম্পাস সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা
অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে অতীতের সিট দখল, ক্যাম্পাসে বৈষম্য, জোর করে রাজনৈতিক সংগঠনে যুক্ত করার অভিযোগসহ নানা বিষয়।
ডা. মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন—হলে রুম দখল, ৫ জনের জায়গায় ১৫–২০ শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য করা হতো।
“জুলাই বিপ্লবে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছিল মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা”
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন—
“জুলাই বিপ্লবের সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের সেবায় এগিয়ে আসে মেডিকেলের ছাত্র শিবিরের চিকিৎসকরা। সেই সাহসিকতা ভুলে যাওয়ার নয়।”
তিনি মেডিকেল খাতের সিন্ডিকেট ও দুর্নীতি ভেঙে নতুন ধারার ক্যাম্পাস গড়ার আহ্বান জানান।
“নতুন ধারার সূচনা”—ডা. যায়েদ
সভাপতির বক্তব্যে ডা. যায়েদ বলেন—
“নবীনবরণ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন ধারা শুরু করেছি। আরও আগে করতে পারলে ভালো হতো।”
তিনি অতীতের ‘স্বৈরাচার আমলে’ হলে থাকা, খাটানো, এবং রাজনৈতিক চাপে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক সংগঠনে জড়ানোর অভিযোগ তুলে ধরেন।
মানবতার সেবায় কাজ করার আহ্বান
অতিথিরা নবাগত শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র চাকরি বা সম্পদ অর্জনের চিন্তা না করে মানবতার কল্যাণে চিকিৎসা দক্ষতা কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত, যেখানে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার, দক্ষতা উন্নয়ন এবং চিকিৎসা জগতের বাস্তবতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা লাভ করেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: