odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যে ঢাকায় রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।

পবিত্র ঈদ উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১ June ২০১৮ ১৯:৩৩

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১ June ২০১৮ ১৯:৩৩

 

 পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যে ঢাকায় রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। ঢাকায় সকাল ৮টার পর পরই এই টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়।
শুক্রবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকাল থেকে ৩১ টি আন্তঃনগর ট্রেনের ১০ জুনের যাত্রার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অগ্রিম টিকিট দেয়া হচ্ছে মোট ২৬টি কাউন্টার থেকে, যার মধ্যে দুটি নারীদের জন্য। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারছেন।
এদিকে রেলের আগাম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম সরেজমিন দেখার জন্য রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আমজাদ হোসেনসহ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেছেন।
নাড়ীর টানে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষ ট্রেনের অগ্রীম টিকিটি কাটতে রাত থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত হন।
সকালে সরেজমিন দেখা যায়, লাইনে দাড়িয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ টিকিট কাটছেন। টিকিট বিক্রি নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য রেলওয়ে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টিকিট কালোবাজারী রোধ করার জন্য স্টেশন জুড়ে ৫৭টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী স্টেশনের নির্ধারিত কাউন্টার থেকে একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা হয়েছে। সকাল ৮টার কিছু পর থেকে এই টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
রাজধানীর শ্যামলী থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাটতে এসছেন কামরুল হাসান। তিনি পবিত্র ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে সৈয়দপুরে গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার কাছে যেতে চান। কামরুল সেহেরির পর স্টেশনে এসে অনেকক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ৪টি টিকিট কিনতে পেরেছেন।
কামরুল হাসান বাসস’কে জানান, তিনি টিকিট পেয়ে খুব খুশি। তিনি স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, রেল কর্তৃপক্ষ ১৬ জুন ঈদের সম্ভাব্য দিন ধরে পাঁচ দিনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির সূচি ঠিক করেছে। আজ শুক্রবার আগামী ১০ জুনের টিকেট বিক্রি হচ্ছে বলে কমলাপুরে টিকেট প্রত্যাশীদের চাপ তেমন নেই। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ট্রেনের কাউন্টারের সামনে ভিড় ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি।
স্টেশন পরিদর্শনকালে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে মন্ত্রণালয় বিশেষ হিসেবে সাত জোড়া ট্রেন চালাতে চেয়েছিল। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশেষ ট্রেন হিসেবে আরও দুটি ট্রেন যুক্ত হওয়ায় ঈদের তিন দিন আগ থেকে মোট নয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এই বিশেষ ট্রেন দুটি হচ্ছে- ঢাকা- খুলনা এবং ঢাকা-লালমনিরহাট।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়াজাহান বাসস’কে জানান, “আজ ১ জুন বিক্রি করা হচ্ছে ১০ জুনের টিকিট। আজ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে তা ৬ জুন পর্যন্ত চলবে। আর যাত্রীদের জন্য রেলের ফিরতি টিকিট ১০ জুন থেকে শুরু হয়ে ১৫ জুন পর্যন্ত চলবে।”
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ‘অগ্রিম টিকিট ১ জুন দেয়া হয়েছে ১০ জুনের টিকেট। আর আগামীকাল ২ জুন দেয়া হবে ১১ জুনের টিকিট, ৩ জুন দেয়া হবে ১২ জুনের টিকিট, ৪ জুন দেয়া হবে ১৩ জুনের টিকিট, ৫ জুন দেয়া হবে ১৪ জুনের টিকিট এবং ৬ জুন দেয়া হবে ১৫ জুনের টিকিট।’
ঈদ ফেরত যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য অগ্রিম টিকিট রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে দেয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘ফিরতি টিকিট ১০ জুন দেয়া হবে ১৯ জুনের টিকিট, ১১ জুন দেয়া হবে ২০ জুনের টিকিট, ১২ জুন দেয়া হবে ২১ জুনের টিকিট, ১৩ জুন দেয়া হবে ২২ জুনের টিকিট, ১৪ জুন দেয়া হবে ২৩ জুনের টিকিট এবং ১৫ জুন দেয়া হবে ২৪ জুনের ফিরতি টিকিট।’
ঈদ উপলক্ষে কমলাপুর ছাড়াও ঢাকার বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, ঈশ্বরদী, রাজশাহী, দিনাজপুর, লালমনিরহাটসহ বড় স্টেশনগুলো থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এবার ঈদ উপলক্ষে ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা রাখা হবে। ঈদ উপলক্ষে সর্বমোট ১ হাজার ৪০৫টি কোচ (বিদ্যমান-১২২১+সপ আউট-টার্ণ-১৮৪) চলাচল করবে। এবং সর্বমোট ২২৯ টি লোকোমোটিভ ব্যবহার করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়েতে প্রতিদিন ২ লাখ ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করে। তবে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দৈনিক ২ লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী চলাচল করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: