odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

দুদকের কাঠগড়ায় সালাউদ্দিন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৫ February ২০১৯ ২৩:০০

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৫ February ২০১৯ ২৩:০০

স্টাফ রিপোর্টার

বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপপরিচালক নাসির উদ্দিনের সই করা চিঠিতে এই তথ্য চাওয়া হয়। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুসন্ধান কর্মকর্তা বরাবর তথ্য পাঠাতে চিঠিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার বাফুফে সূত্রে দুদক থেকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগও দুদকের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। সূত্র জানায়, বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন, মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ৩০ জানুয়ারি অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

দুদকের চিঠির বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের জানান, ‘দুদক কয়েকটি বিষয়ে তাদের কাছে কাগজপত্র চেয়েছে। তাদের চাহিদামতো ডকুমেন্টসগুলো দুদককে সরবরাহ করব।’

কী কী বিষয় খতিয়ে দেখছে দুদক জানতে চাওয়া হলে তার জবাবে সোহাগ বলেন, ‘৭-৮টি বিষয়ে তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চ্যাম্পিয়ন নেপালকে প্রাইজমানি দিতে কেন বিলম্বিত হয়েছিল তা জানতে চেয়েছে।’

বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘দুদক জানতে চেয়েছে আমরা সলিডারিটি কাপ না খেলায় এএফসি যে জরিমানা করেছিল সে বিষয়ে। এর পাশাপাশি ফিফার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ব্ল্যাটারের ঢাকা সফরের খরচের হিসাবও চেয়েছে। তখন অতিরিক্ত খরচ হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা বাফুফের কাছে ১১ ধরনের তথ্য চেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে এএফসি সলিডারিটি কাপ থেকে দল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, কাপে অংশগ্রহণ না করায় এএফসি কর্তৃক ধার্যকৃত জরিমানার ২০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধের রেকর্ডপত্র। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক টুনামেন্ট চ্যাম্পিয়ন নেপালকে প্রাইজমানির ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধের রেকর্ডপত্র। একই বছর অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের প্রচার স্বত্ব বিক্রয়সংক্রান্ত চ্যানেল নাইন এর সঙ্গে বাফুফের সম্পাদিত চুক্তি। চ্যানেল নাইন কর্তৃক বাফুফেকে প্রচার স্বত্বের টাকা পরিশোধের সব রেকর্ডপত্র।

ওই টুনামেন্টের জন্য টেলিকাস্টিং যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিল পরিশোধের কাগজপত্র। এ ছাড়া বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজী সালাউদ্দিনের দায়িত্ব পালনকালে বাফুফের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্টেটমেন্ট।

চিঠিতে সিলেট বিকেএসপি ক্যাম্পাসে ফুটবল একাডেমির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বিল বাবদ দেয়া অর্থপ্রাপ্তি ও অর্থ ব্যয়ের রেকর্ডাত্র, বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর হিসেবে মি. পাওল থমাস স্ম্যালির প্রোফাইল, তার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়োগ ও বেতনের রেকর্ডপত্র, ফিফা সভাপতির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে ব্যয় করা অর্থের সব রেকর্ডপত্র ও ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাফুফের সব বার্ষিক প্রতিবেদন ও বিশেষ অডিট রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে এএফসি সলিডারিটি কাপে অংশ নেয়নি। যে কারণে ২০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল বাফুফে। এছাড়া জাতীয় দলের সাবেক দুই কোচ নেদারল্যান্ডসের লোডভিক ডি ক্রুইফ ও রেনে কোস্টারের পাওনা নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছিল সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে দুদক।

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নেপাল। ফাইনালে তারা ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাহরাইন অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রাইজমানি হিসেবে নেপালের পাওনা ছিল ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ২৫ হাজার মার্কিন ডলার দেয়ার পর বাকি অর্থ দিতে বিলম্ব করেছিল বাফুফে।

নেপালের প্রাইজমানির অর্থ আমরা পুরোটাই পরিশোধ করেছি। সেই ডকুমেন্টস আমরা খুব তাড়াতাড়ি দুদককে সরবরাহ করব। আসলে দুদকের এটি রুটিন ওয়ার্ক। কেউ অভিযোগ করলে সেটা খতিয়ে দেখতেই পারে তারা- জানান বাফুফের সাধারণ সম্পাদক।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: