odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫
ইচ্ছা থাকলে কোন অপূর্ণতা প্রতিবন্ধকতা হয় না

আলিম পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৩.৮৬ পেয়েছেন নিলা খাতুন।

gazi anwar | প্রকাশিত: ১৭ July ২০১৯ ১৯:২৪

gazi anwar
প্রকাশিত: ১৭ July ২০১৯ ১৯:২৪

আলিম পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৩.৮৬ পেয়েছেন নিলা খাতুন। তিনি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বরধুল গ্রামের ওসমান গণীর মেয়ে।

নিলার একটি হাত নেই আর একটি হাত জন্মের পর থেকেই অকেজো। হাত না থাকলেও মনের জোরের কমতি ছিল না তার। তাই এবার কামারখন্দের ‘চর বরধুল দাখিল মাদরাসা’ থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খাতায় উত্তর লিখেছেন পা দিয়ে। এর আগে ২০১৭ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.৭০ নিয়ে দাখিল পাস করেন তিনি।

তার সহপাঠীরা জানান, সবাই যখন স্বাভাবিক নিয়মে বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেয়। তখন নিলা দু’পায়ে কাঠের বিশেষ আসনে দাঁড়িয়ে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেন। নিলার হাত না থাকায় পা দিয়ে পরীক্ষা দেয়া দেখে আমরা সবাই অবাক হয়েছি। আমরা সুস্থ্ শরীরে পরীক্ষা দিতে গিয়ে একটু ভয় ভয় লাগছিল। কিন্তু নিলাকে দেখে মনে হয়েছিল স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলেছে। তার এ অদম্য ইচ্ছা দেখে মনে হয়েছে আমাদের চেয়ে সে অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েছে। তার ভালো ফলাফল দেখে আমরা সবাই খুশি হয়েছি।


নিলার বাবা ওসমান গণী জানান, ফলাফল দেখে অনেক আনন্দিত, তবে রয়েছে নানা দুশ্চিন্তাও। আমি কৃষি কাজ করে দুটা ছেলেকে মাস্টার্স পাস করালেও এখন তারা বেকার। একটা ছোট ছেলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। কৃষিকাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এর মধ্যে নিলার লেখাপড়া কত দূর চালিয়ে নিতে পারবো আল্লাহই জানেন।

নিলা খাতুন জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়ায় অর্থ সঙ্কট ছিল প্রকট। আমি সেই প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে পাশ করেছি। এ পর্যন্ত পৌঁছতে পেরে সব শিক্ষক, বাবা-মা, সহপাঠী, সহযোগী সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি প্রতিবন্ধী হলেও সমাজের বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না। এখন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে যেন সরকারি চাকরি করে দেশের সেবা করতে পারি এজন্য সরকারের কাছে আমার পড়াশোনা ও সবধরনের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিলার পরিবার একটি আবেদন দিলে সরকারি সবধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: