odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

চাপের ম্যাচে আবারও ব্যর্থ মেসি

Admin 1 | প্রকাশিত: ২১ April ২০১৭ ১৯:৫৯

Admin 1
প্রকাশিত: ২১ April ২০১৭ ১৯:৫৯

দানি আলভেজের কাঁধে মাথা গুঁজে কেঁদেই চলেছেন নেইমার। জুভেন্টাসের কাছে হেরে যাওয়ার পর বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের এমন কান্না দেখে একটু বিস্মিত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এতটা আবেগপ্রবণ হওয়ার কী আছে! বার্সার আর কেউ তো এমন ভেঙে পড়েননি! এমনও নয় যে, এই অভিজ্ঞতা একেবারে নতুন। গত বছর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বার্সা তো এই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে।
পরশু নেইমার যেভাবে খেলেছেন, তাতে অবশ্য দলের বিদায়টা তাঁকে আবেগপ্রবণ করে তুলতেই পারে। পুরো ম্যাচেই খেলেছেন প্রায় ‘ভূতে পাওয়া লোকের’ মতো। গতি, ড্রিবলিং দিয়ে জুভেন্টাস রক্ষণকে ত্রস্ত করে রেখেছেন। কিন্তু বন্ধু থেকে প্রতিপক্ষ বনে যাওয়া আলভেজই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী। আরেকটি ‘ট্রেবল’ জয়ের স্বপ্ন যখন চুরমার নেইমারের, বার্সার হয়ে দুটি ‘ট্রেবল’জয়ী আলভেজের জুভেন্টাসের হয়ে ত্রি-শিরোপার স্বপ্নটা উজ্জ্বল হলো আরও। ম্যাচ শেষের আলিঙ্গনে নেইমারকে সান্ত্বনা দিতে কী বলেছেন, সেটি জানিয়েছেন নিজেই, ‘আমি বলেছি, এটাই জীবন।’
তিন গোল করতেই হতো, এমন ম্যাচে একটা গোলও করতে পারেননি বার্সার বিখ্যাত ত্রয়ী। অথচ ‘এমএসএন’-এর তিন বা এর বেশি গোল আছে ৪৯ ম্যাচে। এর নয়টি ম্যাচ চ্যাম্পিয়নস লিগেই। তবে যেদিন সবচেয়ে বেশি দরকার, সেদিনই তাঁরা ব্যর্থ। দুই লেগের ১৮০ মিনিটে গোল করতে পারেনি বার্সেলোনা, ২০১৩ সালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৭-০ গোলে হারের পর এমনটা আর কখনো হয়নি।
দায়টা সবচেয়ে বেশি পড়বে মেসির কাঁধে। এ যুগের সেরা খেলোয়াড় মেসি না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—সে প্রশ্নের উত্তরে পুরো বিশ্ব দুই ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু সর্বকালের সেরাদের প্রশ্ন উঠলে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে যে একটা ক্ষেত্রে বারবার পিছিয়ে পড়ছেন মেসি। দুর্ভাগ্য কিংবা গঞ্জালো হিগুয়েইনের দিকে আঙুল তুলে আর্জেন্টিনার হয়ে টানা তিন ফাইনাল-ব্যর্থতা না হয় চাপা দেওয়া গেল। কিন্তু পরশুর পারফরম্যান্সের কী ব্যাখ্যা? ব্যাখ্যা হয় একটাই, যা মেসির জন্য মোটেই প্রীতিকর নয়। জীবন-মরণ ম্যাচের চাপে তিনি ভেঙে পড়েন।
এই ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে তুমুল আলোচনা, মেসিদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধার নাম জিয়ানলুইজি বুফন। কিন্তু বুফনকে তো বড় কোনো পরীক্ষাই দিতে হলো না! পুরো ম্যাচে স্বাগতিক দল গোলে শটই নিতে পেরেছে মাত্র একটি। মেসির দুর্বল শট ঠেকাতে ‘বুফনীয়’ কিছু করতেও হয়নি জুভেন্টাস গোলরক্ষককে। তবে বুফনও হার মেনেছিলেন একবার। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ঠেকাতে গিয়ে গোলবার থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। সুয়ারেজের পাসটা ঠিকই খুঁজে নিয়েছিল মেসিকে। গোলে নেই বুফন, তাঁকে আটকাতে পারবে এমন ডিফেন্ডারও নেই আশপাশে—এমন অবস্থায় মেসি বলটা পাঠালেন ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে! পুরো ম্যাচে এভাবেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে তাঁর আরও চারটি শট। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে টানা চার ম্যাচে গোল পেলেন না মেসি। আরও একবার জিততেই হবে—এমন ম্যাচে আবারও মেসি সেই দিগ্ভ্রান্ত পথিক।
পিএসজির বিপক্ষে ওই মহানাটকীয় ম্যাচেও কাঁধ ঝুলে পড়া মেসিকে দেখা গিয়েছিল। বার্সার ৬-১ গোলের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান নেইমারের হার না মানা মানসিকতার। পরশু নেইমারও পারেননি দলকে টানতে। মৌসুমে এরই মধ্যে ৪৫ গোল করে ফেলেছেন মেসি। বোঝাই যায়, দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে যদি এভাবে বারবার নিজেকে হারিয়ে খোঁজেন, সর্বকালের সেরা নিয়ে আলোচনায় তাঁর নামের পাশে প্রশ্নচিহ্নটা ক্রমেই বড় হতে থাকবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: