
দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহর জমিনে আল্লাহর নিজাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভ ও জান্নাত হাসিল করতে ময়দানে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার ও প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
আজ রাজধানীর মিরপুরের ৪ নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে মিরপুর, পল্লবী ও কাফরুল জোন জামায়াত যৌথ আয়োজিত রুকন শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালানো ঐচ্ছিক কোনো বিষয় নয়, বরং প্রত্যেক মোমিনের উপরই অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো অবিশ্বাসী বা কাফিরের ওপর ফরজ করা হয়নি। মূলত, আমাদের জন্য ইসলামকেই জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। আর কালামে হাকীমকে আমাদের জীবন চলার পাথেয় হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। মূলত, মোত্তাকীদের পথ পদর্শনের জন্যই পবিত্র কোরয়ান জীবন বিধান হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে। আর যারা প্রকৃত পক্ষেই মোস্তাকি তারাই শুধু কোরয়ান থেকে লাভবান বা উপকৃত হতে পারে। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সকলকে আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে ময়দানে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই মুসলমান। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও আমাদের সমাজেরই অংশ। আমাদের ওপর নামাজ, রোজা, হজ যাকাত যেমন ফরজ, ঠিক তেমনিভাবে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনসহ সকল ক্ষেত্রে ইসলাম অনুসরণ করাও ফরজ। মূলত, মোমিন জীবনের দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই ইসলাম অনুসরণ করতে হবে। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ও শাস্বত জীবন বিধান। যেখানে মানবজীবনের সকল সমস্যার ইনসাফপূর্ণ সমাধান দেওয়া হয়েছে। আর আনুগত্যের সর্বোত্তম নমুনা হচ্ছে রাসূল (সা.) জীবন দর্শন। তাই জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা)-এর আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি।
জামায়াত আমীর বলেন, প্রত্যেক মোমিনের জীবনোদ্দেশ্যই হচ্ছে দ্বীন। মোমিন জীবনের আর দ্বিতীয় কোনো উদ্দেশ্য নেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বাতিলের ওপর দ্বীনে হক্বকে বিজয়ী করার দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়াতে নবী- রাসূলগণকে প্রেরণ করেছিলেন। বিশ্বনবী (সা.) একই দায়িত্ব নিয়ে দুনিয়াতে এসেছিলেন। তার আসহাবগণও একই দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সে ধারাবাহিকতায় তা এখন আমাদের ওপর বর্তেছে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের ওপরই জুলুম-নির্যাতন ছিল নিত্যসঙ্গী। মূলত, ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতনের ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র। তাই বাতিলে রক্তচক্ষুকে ভয় পেলে চলবে না বরং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্বীন বিজয়ের জন্য সকলকে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় রুকনসহ ইসলামী আন্দোলনের সকল স্তরের নেতাকর্মীকে ময়দানে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও ইয়াছিন আরাফাত এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মুফতি ড. মাওলানা আবুল কালাম আযাদ বাশার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: