odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 13th November 2025, ১৩th November ২০২৫

নারী-পুরুষের সমতা হলেই বৈষম্যহীন সমাজ গঠন হবে : নারী আনদোলন

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২ November ২০২৪ ১৭:৫৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২ November ২০২৪ ১৭:৫৬

বাংলাদেশ নারী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত নারী-পুরুষের সমতা। সমাজে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় নারী আন্দোলনের ভূমিকা নিয়ে তরুণীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তারা আজ একথা বলেন।  

বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত নারী-পুরুষের সমতা’-শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সুফিয়া কামাল ভবনের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে আজ সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের  সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। আলোচনায় অংশ নেন মেহেরুন্নেছা পরশমণি, রওনক জাহান, ওয়াসিমা ফারজানা, নারী সংগঠক তৃষিয়া নাশতারান, নিহা, আফসা এবং মণি দীপা চক্রবর্তী, সায়মা আলী অদিতি, ঢাকা বিশ্ব্বিদ্যালয়ের ছাত্রী তানজিনা হাফসা, কলেজ শিক্ষার্থী তানিয়া, ওয়াইডব্লিউ সিএ’র শিক্ষার্থী স্তুতি , দেবলীনা ভট্টাচার্য, ফিল্মমেকার সাদিয়া আফরীন অরণী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সিউতি সবুর এবং বহ্নিশিখার তাসাফিফ  হোসেন।

আগামীতে নারী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সম্মিলিতভাবে একটা বড় ধরণের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা আবশ্যক উল্লেখ করে ড. সিউতি সবুর বলেন, গত ৫ বছরে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অনেক বড় ইস্যুতে মহিলা পরিষদ যেমন আন্দোলন করেছে, তেমনি ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও আন্দোলন করেছে। পাশাপাশি তরুণীদের নিয়ে নেটওয়ার্ক গঠনের কাজ করছে। তিনি নারী আন্দোলনকে বেগবান করতে তরুণীদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেন।  

নারীবাদী সংগঠক তৃষিয়া নাশতারান বলেন, নারী আন্দোলন স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণমূলক হওয়ার পাশাপাশি গঠনমূলক ও সুচিন্তিত মতামতের আলোকে হওয়া উচিত। মৌলবাদী আক্রমণের মূল লক্ষ্য  থাকে নারীকে অদৃশ্য করা, এক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি আরো দৃশ্যমান হওয়া আবশ্যক। তাই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে নারী আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।

মেহেরুন্নেছা পরশমণি বলেন, সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি নারী-পুরুষের সমতা। গ্রামের নারীকে এখনো পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে দেয়া হয়না, এ বিষয়ে সচেতনামূলক কর্মসূচিতে তরুণীদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। পরিবারের পুরুষদের নারীর সমান অধিকারের বিষয়ে  সচেতন করতে হবে।

রওনক জাহান বলেন,  নারীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সচেতন করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিকতা কেবল পুরুষের মধ্যে নয়, এমন মানসিকতা নারীদের মধ্যেও রয়েছে। এ জন্য তৃণমূলে পরিবারের সদস্যদের মানসিকতা পরিবর্তনে  সচেতনামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য মহিলা পরিষদকে আহ্বান জানান তিনি।

ওয়াসিমা ফারজানা বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী এখনো পিছিয়ে আছে, তাদের মধ্যে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস আছে, এ বিষয়ে নারীদের সচেতন করে তুলতে পারলে তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে আগ্রহী হবে।

বক্তারা বলেন, ঢাকার অনেক স্বচ্ছল পরিবারের নারীরা কাজ করার জন্য পরিবারের বাইরে যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্তকে মেনে নিচ্ছেন। এর বিপরীতে মফস্বলের নারীরা পরিবারের সাথে সমঝোতা করে একা বাইরে যেয়ে লেখাপড়া করেন, বিয়ের পরেও চাকরি করছেন। অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, নারীদের নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। 

সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করতে নারীদের আরো জোরালোভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন,  সাইবার বুলিংয়ের শিকার বেশি হয় নারীরা। এতে নারীদের মনোবল ভেঙে যায়। এ বিষয়ে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। তারা নারীদের আত্মরক্ষার জন্য সাংগঠনিক পরিসরে যুক্ত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। 

সভাশেষে  উপস্থিত সকলে সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: