
টাইফুন-হারিকেন-সাইক্লোন নাম ভিন্ন ঝড় একই, আসলে পার্থক্য কোথায়?
সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতের পরে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে টাইফুন-হারিকেন-সাইক্লোন- এদের মধ্যে আসল পার্থক্য কোথায়? বিশ্বজুড়ে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কথা উঠলেই নামের ভিন্নতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। কোথাও বলা হচ্ছে টাইফুন, কোথাও হারিকেন, আবার দক্ষিণ এশিয়ায় সাইক্লোন। আসলেই কি এদের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন না, মৌলিকভাবে এদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শুধু নামের ভিন্নতা আছে ঝড়ের কোনো ভিন্নতা নেই।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, টাইফুন, হারিকেন ও সাইক্লোন সবই উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় (Tropical Cyclone)।পার্থক্য কেবল কোন মহাসাগরের কোন অঞ্চলে এই ঝড় তৈরি হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে।
- হারিকেন (Hurricane): আটলান্টিক মহাসাগর ও উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে এই নাম ব্যবহৃত হয়।
- টাইফুন (Typhoon): উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে, বিশেষ করে জাপান, ফিলিপাইন ও চীনের উপকূলে আঘাত হানলে একে টাইফুন বলা হয়।
- সাইক্লোন (Cyclone): ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর ও অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ব্যবহৃত নাম।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণ জল থেকে এই ঝড় শক্তি সংগ্রহ করে। পানির বাষ্প বায়ুমণ্ডলে উঠে গিয়ে ঘনীভূত হয়, এতে প্রচুর তাপশক্তি মুক্তি পায় এবং বাতাস ঘূর্ণায়মান হতে শুরু করে। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১১৯ কিলোমিটারের বেশি হলে সেটিকে হারিকেন, টাইফুন বা সাইক্লোন বলা হয়। এর নিচে হলে তাকে ‘ট্রপিক্যাল স্টর্ম’ ধরা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর হারিকেন মৌসুমে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে। জাপান ও ফিলিপাইন টাইফুনের আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে প্রায় প্রতিবছর সাইক্লোন আঘাত হানে, যা জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মাধ্যমে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করে। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) বলছে ঝড় একই, নাম ভিন্ন। মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে নাম বদলায়, বৈজ্ঞানিক দিক থেকে কোনো পার্থক্য নেই। টাইফুন, হারিকেন বা সাইক্লোন সবই একই প্রকৃতির ভয়ঙ্কর ঝড়। নাম আলাদা হলেও মানুষের জীবনে এর প্রভাব সমান বিধ্বংসী।
- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)
টাইফুন বনাম হারিকেন বনাম সাইক্লোন উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের পার্থক্য ঝড়ের নাম কেন ভিন্ন Tropical Cyclone Explained in Bangla
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: