odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 15th November 2025, ১৫th November ২০২৫

বাংগালীর শহীদ মিনার নেদারল্যান্ডসে উদ্বোধন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২২ February ২০১৯ ১৮:৩৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২২ February ২০১৯ ১৮:৩৮

মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রথম শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হলো নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরের জাউদার পার্কে। নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত জনাব শেখ মুহম্মদ বেলাল এবং দি হেগ মিউনিসিপ্যালিটির ডেপুটি মেয়র মিজ সাসকিয়া ব্রুনস শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত ভারত, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, রাশিয়ান ফেডারেশন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, ইয়েমেন, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং দি হেগের কূটনৈতিক কম্যুনিটি, ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ও নেদারল্যান্ডসে বসবাসরত বাংলাদেশী কম্যুনিটিরী সদস্যরা।

দি হেগ শহরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে 'শান্তি এবং ন্যায়বিচারের' শহর হিসেবে খ্যাত দি হেগ শহরের মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ শহরটির ঐতিহাসিক জাউদার পার্কে শহীদ মিনার নির্মাণের লক্ষ্যে একখণ্ড জমি বরাদ্দ প্রদান করে। শান্তি এবং বহুভাষাতত্ত্বের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্যই যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই শহীদ মিনার নির্মাণের খরচ বাংলাদেশ সরকার এবং নকশা প্রণয়নের খরচ বহন করে ডাচ সরকার।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং বুধবার রাতে ঢাকায় অগ্নিদুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এই শহীদ মিনার নির্মাণে সাহায্য-সহযোগিতার জন্য দি হেগের মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত বেলাল ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে স্মরণ করেন এবং সেই আন্দোলনকে ধারন করে বাংলাদেশ কিভাবে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল তা তুলে ধরেন।


দি হেগের ডেপুটি মেয়র মিজ সাসকিয়া ব্রুনস তাঁর বক্তব্যে শহীদ মিনারের সফলভাবে নির্মাণের নিমিত্তে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং দি হেগ মিউনিসিপ্যালিটিকে অভিনন্দন জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, নেদারল্যান্ডে মোট ২০ (বিশ) ধরণের ভাষা ব্যবহৃত হয় এবং প্রত্যেক ভাষার ব্যবহার-ই গুরুত্বপূর্ন। বিভিন্ন জাতির মানুষের পারস্পরিক সহাবস্থানের মাধ্যমে যেমন সৌহার্দ্যপূর্ন সমাজ গঠিত হয় তেমনি সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার জন্য প্রত্যেকটি ভাষারই প্রচলন থাকা প্রয়োজন। তিনি মন্তব্য করেন যে, জাউদার পার্কে নির্মিত এই শহীদ মিনার কেবল দি হেগকেই গৌরবান্বিত করবে না, একইসাথে মাতৃভাষাকে রক্ষা এবং এগিয়ে নিতে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

দি হেগের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র জনাব রবিন বলদেভসিং, যিনি শহীদ মিনার নির্মাণে জমি বরাদ্দে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, বহুভাষাতত্ত্ব এবং বহু-সংস্কৃতির সহাবস্থানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং উল্লেখ করেন দি হেগে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা মন্যুমেন্ট নির্মাণে এই ধারণা তাদের প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। নতুন নির্মিত এই শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, দি হেগের ডেপুটি মেয়র, অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, কূটনৈতিক কম্যুনিটির সদস্যগণ, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশ কম্যুনিটির সদস্যগণ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জনাব মোঃ শহীদুল হক বিগত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে দি হেগে এই শহীদ মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছিলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: