odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 15th November 2025, ১৫th November ২০২৫
ভেনিজুয়েলায় মানবিক ত্রাণ গ্রহণ করা নিয়ে

রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় দুই জন নিহত হয়েছে ভেনিজুয়েলায় মানবিক ত্রাণ গ্রহণ করা নিয়ে

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৪ February ২০১৯ ১৫:২৪

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৪ February ২০১৯ ১৫:২৪

ভেনিজুয়েলায় মানবিক ত্রাণ গ্রহণ করা নিয়ে ক্ষমতাসীন বাহিনীর সাথে বিরোধীপক্ষের রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় দুই জন নিহত হয়েছে। শনিবার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারী বাহিনীর উপর গুলি চালায়। মাদুরোপন্থীরা ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিভিন্ন সীমান্ত ক্রসিংয়ে এই সংঘর্ষে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরসহ দুই জন নিহত ও প্রায় ৩ শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
মাদুরোর অবরোধ সত্ত্বেও বিরোধী দলীয় নেতা জুয়ান গুয়াইদো কলম্বিয়া ও ব্রাজিল সীমান্তে খাবার ও অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা গ্রহণের করতে দিন হিসেবে শনিবারকে নির্ধারণ করেন।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপ কুরাকাওয়েও ত্রাণ আটকে দেয়া হয়েছে।
এই মানবিক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাদুরো ও ভেনিজুয়েলার জাতীয় পরিষদের নেতা গুয়াইদোর (৩৫) মধ্যে তীব্র মতাবিরোধ ও উত্তেজনা চলছে। এই ত্রাণের সিংহভাগই যুক্তরাষ্ট্র যোগান দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এক মাস আগে গুয়াইদো নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পোম্পেও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি মাদুরোর সৈন্যদের ‘ঠগ’ অভিহিত করে এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানান।
এদিকে, গুয়াইদো সোমবার বগোটায় লিমা গ্রুপ বৈঠকে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি মাদুরোর ব্যাপারে সম্ভাব্য ‘সব ধরনের প্রস্তুতি’ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভেনিজুয়েলায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দা ও মুদ্রাস্ফিতী মানুষকে চরম দারিদ্রতায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
গভর্নর রিকার্ডো রোসেলো বলেন, ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী গুলিবর্ষণের হুমকি দেয়ায় মার্কিন ভূখ- পুয়ের্তোরিকো থেকে ত্রাণবাহী একটি নৌযানকে ফিরে যেতে হয়েছে।
তিনি ভেনিজুয়েলা সৈন্যদের এই আচরণকে ‘মানবিক মিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর সংঘনজনিত আচরণ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
কলম্বিয়া সীমান্তে শত শত স্বেচ্ছাসেবী ত্রাণ নিয়ে ভেনিজুয়েলায় ঢুকতে না পেরে হতাশা ব্যক্ত করেছে। মাদুরোর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।
ভোরবেলা থেকেই বিক্ষোভকারীরা সীমান্তবর্তী শহর উরেনা ও সান অ্যান্টোনিওতে বিক্ষোভ করছে। এ সময় ভেনিজুয়েলার ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ঘটে। তারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রবার বুলেট ছুঁড়ে।
কয়েক ঘন্টা ধরে চলা দাঙ্গার সময় গুলির শব্দ শোনা যায়।
কলম্বিয়ার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত ক্রসিংয়ে সংঘর্ষে অন্তত ২৮৫ জন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের পর কলম্বিয়াও ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।
যারা ত্রাণের প্যাকেটগুলো ভেনিজুয়েলায় ঢুকানোর চেষ্টা করছিল তাদের অধিকাংশই ভেনিজুয়েলান নাগরিক।
কয়েকশ মাইল দূরে সান্তা এলেনা ডি উয়ারেন ক্রসিং পয়েন্টে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। এটি দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্রাজিল সীমান্তের কাছে। এখানে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
ডানপন্থী ফোরো পেনালের মতে, সৈন্যরা প্রবেশপথে বাধা দেয় ও বেসামরিক মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে আরো ৩১ জন আহত হয়।
গুয়াইদো কলম্বিয়ার কুকুটা থেকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা সান্তা এলেনা ডি উয়ারেন ও সান অ্যান্টোনিওতে সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ম্যাসাকার করেছে।’
তিনি কলম্বিয়া থেকে ত্রাণ অভিযানের সমন্বয় করছেন।
এদিকে মাদুরোর সমর্থকরা সীমান্তবর্তী একটি সেতুতে দুটি ত্রাণবাহী ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
৫০টির বেশি দেশ গুয়াইদোকে ভেনিজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
গুয়াইদো বলেন, ৩ লাখ ভেনিজুয়েলান নাগরিকের জরুরি ভিত্তিতে খাবার ও ওষুধ প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে এগুলোর তীব্র সংকট চলছে। এতে তারা অপুষ্টিতে ভুগছে।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রতিদিন ভেনিজুয়েলা থেকে প্রায় ৫ হাজার লোক অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: