বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
ডেভিড বার্গম্যান লিখেছেন—শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচারসংক্রান্ত রায়ে দুইটি গুরুতর দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে; ১) আসামিপক্ষের যে আইনজীবী নিয়োজিত ছিলেন, তারা প্রসিকিউশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলোর বিরুদ্ধে মৌলিক প্রশ্নগুলোই তোলে নাই, এবং ২) ট্রাইব্যুনাল নিজে প্রাপ্ত প্রমাণগুলো সুষ্ঠুভাবে খতিয়ে দেখেনি। এই দুই কারণে রায়ে যে যুক্তি ও ব্যাখ্যা এসেছে সেখানে আইনি ফাঁক রয়ে গেছে বলে তিনি বিশ্লেষণে দেখান।
বার্গম্যান বলেন, বিশেষ করে ১৪ জুলাইয়ের টেলিফোনালাপ-এর ব্যাখ্যা ট্রাইব্যুনালের তরফে এমনভাবে উপস্থাপিত হয়েছে যে তা থেকে ‘হত্যার আদেশ’ দরকারি রকম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কথোপকথনের বিস্তারের পুনঃবিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ওই বক্তব্যগুলো রাগ, আকস্মিক ভাষ্য বা বিচারবহির্ভূত শাস্তির ইঙ্গিত হতে পারে—তবে সরাসরি হত্যার আদেশ হিসেবে কেউ সহজে নির্ধারণ করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন যে, যদি ডিফেন্স-পক্ষ যথাযথ ও দক্ষ আইনজীবী দিয়ে সুসংযুক্ত যুক্তি সাজাতো, তাহলে ১৪ জুলাইয়ের ফোনালাপ-সম্পর্কিত প্রসিকিউশনের ব্যাখ্যা অনেক জটিল প্রশ্নে পড়ত এবং ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত অনেক ভিন্ন মিশ্রণ পেত। কিন্তু ডিফেন্স-টিমের ব্যর্থতার ফলে বিচারকরা সহজেই প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত বর্ণনায় ঝুঁকেছে—যার ফলে রায়ের কিছু অংশের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বার্গম্যানের বিশ্লেষণে আরও বলা হয়েছে যে, ১৪ জুলাইয়ের আলাপকে যদি হত্যার আদেশ হিসেবে দেখা না যায় তবে ১৬ জুলাই রংপুর ও চট্টগ্রামের মামলাসহ অন্যান্য ঘটনাগুলোর মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে ধরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রকৃত প্রাণঘাতী নির্দেশনা ১৮ জুলাইতে পাওয়া হওয়ার সাক্ষ্য আছে—এই বিবেচনায় ১৪ জুলাইভিত্তিক ব্যাখ্যার ওপর দাঁড়িয়ে কোনো বৃহৎ প্রমাণ-নির্ভর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হয় না।
সংক্ষেপে, বার্গম্যান বলেন—ট্রাইব্যুনালের যুক্তির তলদেশে যেসব আইনি দুর্বলতা আছে সেগুলো আরেক ধাক্কা হতে পারে চলমান আইসিটি মামলা-মালার ওপর; বিশেষত যেখানে রংপুর-চট্টগ্রাম ইত্যাদি ঘটনায় দায় সংযুক্ত রয়েছে। তার ওপর তিনি প্রশ্ন তুলেছেন—ট্রাইব্যুনাল-১-এর যুক্তি ট্রাইব্যুনাল-২-কে বাধ্য করে কি না; আর তা কি সামগ্রিক বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।
- প্রধান দাবি: ১৪ জুলাইয়ের ফোনালাপকে কেবল রাগের বাগিয়ে বলা সম্ভব; তা সরাসরি হত্যার আদেশ প্রমাণ করে না।
- আইনি প্রভাব: যদি ১৪ জুলাই ভিত্তি না থাকে, তাহলে ১৬ জুলাইর হত্যাকাণ্ডকে 'মানবতাবিরোধী' হিসেবে দেখানো শক্ত হবে।
- প্রসিকিউশন বনাম ডিফেন্স ফেইলিং: বিস্তারিত ও যোগ্য প্রতিরক্ষা না থাকায় প্রমাণ-পর্যালোচনায় ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
- সম্ভাব্য ফলাফল: ট্রাইব্যুনালের ব্যাখ্যার ভিন্নতা অন্যান্য মামলার রায়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
#শেখহাসিনা #আইসিটিবিচার #ট্রাইব্যুনাল #ডেভিডবার্গম্যান #বিচারবিশ্লেষণ #BangladeshJustice #OdhikarpatraDotCom
প্রকাশিত উৎস: ডেভিড বার্গম্যান (David Bergman) — Contributor.
প্রকাশের তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫.

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: