odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Sunday, 16th November 2025, ১৬th November ২০২৫

ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কোস জুনিয়রের জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ May ২০২২ ২২:২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ May ২০২২ ২২:২০


প্রায় ৬ বছর আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াই করে হেরেছিলেন ফিলিপাইনের সাবেক একনায়ক ফার্দিনান্দ মার্কোসের ছেলে। এবার ঠিকই জয় ছিনিয়ে নিলেন মার্কোস জুনিয়র। ফলে বিতর্কিত মার্কোস পরিবার প্রায় ৩ দশক পর আবারও মালাকানাং প্রাসাদে ফিরে আসছে।

মার্কোস পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, লুটপাট ও নৃশংসতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ফিলিপাইনের মানুষের প্রবল গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের রাজকোষ খালি করে গিয়েছিল এই পরিবার। অনেকেই চান না অত্যাচারী মার্কোস পরিবার আবারও ক্ষমতায় আসুক। অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সিরা এখনও মার্কোস পরিবারের অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ডের কথা ভোলেনি। তাদের কাছে বিষয়টি অকল্পনীয়।

ফিলিপাইনে ‘বংবং’ নামে পরিচিত এই প্রার্থী তরুণ সমাজের কাছে জনপ্রিয়। তিনি ‘সমতার’ কথা বলছেন। আরও বেশি চাকরি, পণ্যের দাম কমানো এবং কৃষি ও অবকাঠামো খাতে আরও বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য তিনি সঙ্গে পাচ্ছেন বিদায়ি রাষ্ট্রপ্রধান রদ্রিগো দুতের্তের মেয়ে সারা দুতের্তে কার্পিওকে।

মার্কোস জুনিয়রের রাজনৈতিক প্রচারণায় বাবার শাসনামলের ভালো দিকগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। তার স্লোগান, ‘আবারও জেগে উঠুন’। এর মাধ্যমে তিনি ফিলিপাইনের ‘সোনালি যুগের’ কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাইছেন।

সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি তার বাবার প্রশংসা করে তাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিভা’ ও তার মাকে একজন ‘অসামান্য রাজনীতিবিদ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

কিন্তু এক গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৮৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ফার্দিনান্দ মার্কোস। এ পরিবার বিশ্বজুড়ে কুখ্যাতি অর্জন করে তাদের দুর্নীতির জন্য। তার শাসনামলে ফিলিপাইনে কী ব্যাপক দুর্নীতি আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছিল, আদালতের রেকর্ড আর সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে তার বিস্তারিত বিবরণ এবং প্রমাণ আছে। গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী কর্মীরা যখন ম্যানিলায় প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢুকে পড়েছিল, তখন সেখানে মার্কোস পরিবারের বহু চমৎকার তৈলচিত্র, সোনায় মোড়ানো জাকুজি, ১৫টি মিংক কোট, ৫০৮টি ডিজাইনার গাউন, এবং ফার্স্ট লেডি ইমেলদা মার্কোসের তিন হাজার জোড়া জুতার সংগ্রহ দেখতে পান।

সেই পরিবারেরই সন্তান বংবং এরই মধ্যে ফিলিপিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে ভূমিধস জয় পেয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণা যখন চলছিল বিপুল উদ্যমে, তখন সমর্থকরা অতীতের এসব ঘটনা এবং তথ্য সম্পর্কে তাদের সংশয় প্রকাশ করছিলেন। বংবং এর বিরোধী শিবিরের লোকজন এজন্য দায়ী করছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে। তাদের মতে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে, মার্কোস পরিবারের কলঙ্কময় অতীত মুছে ফেলা হয়েছে। তবে মার্কোস পরিবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক বছর ধরেই ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট আর নানা রকমের প্রোপাগান্ডা পোস্ট দিয়ে চালানো হচ্ছে মার্কোস পরিবারের গুণকীর্তন। এসব পোস্টে অতীত ইতিহাসকে এতটাই ব্যাপকভাবে বিকৃত করা হয়েছে যে, লোকে এসব ভুল তথ্য দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, তোতাপাখির মতো সেগুলোকেই সত্য বলে পুনরাবৃত্তি করে। এসব পোস্টে সাধারণভাবে একটা কথাই বেশি করে বলা হয়: মার্কোসের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনামলটাই ছিল আসলে ফিলিপিনের 'স্বর্ণযুগ'- যদিও আসলে তখন ফিলিপিনের অর্থনীতি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছিল, এবং দেশটি ছিল বিদেশি ব্যাংকগুলোর কাছে বিপুলভাবে ঋণগ্রস্ত।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: