odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২
ট্রাম্প পোর্টল্যান্ডে সেনা মোতায়েন ও ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন। বিরোধীরা বলছে উসকানি, সমর্থকরা বলছে আইন প্রয়োগ।

পোর্টল্যান্ডে ‘যুদ্ধ’ প্রস্তুতি: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, সেনা মোতায়েন ও পূর্ণ শক্তি ব্যবহারের অনুমোদন

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৪৩

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৪৩

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওরেগনের পোর্টল্যান্ড শহরে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক ঘোষণায় তিনি বলেন, আমি যুদ্ধবিধ্বস্ত পোর্টল্যান্ড রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব সেনা পাঠাতে যুদ্ধ সচিব পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিচ্ছি। ট্রাম্প দাবি করেন, এ পদক্ষেপে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এর ওপর চালানো হামলা থেকে ফেডারেল স্থাপনাগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। তিনি ট্রুথ সোশ্যাল আরও লেখেন, প্রয়োজনে আমি পূর্ণ শক্তি ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছি। ঘোষণার পরপরই ডেমোক্র্যাট নেতারা কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক বলেন, পোর্টল্যান্ডে কোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি নেই। আমাদের সম্প্রদায় শান্ত ও নিরাপদ। তিনি প্রশাসনের কাছ থেকে অতিরিক্ত তথ্যও চান। পোর্টল্যান্ডের মেয়র কিথ উইলসন আরও কঠোর ভাষায় বলেন, প্রয়োজনীয় সৈন্যের সংখ্যা শূন্য পোর্টল্যান্ডে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যে কোনো শহরে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল বিবিসিকে জানান, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে তারা ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)-এর সহায়তায় সেনা প্রস্তুত রাখবে। তবে এখনো স্পষ্ট নয়, ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড নাকি নিয়মিত সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চান। জুন মাস থেকে পোর্টল্যান্ডে আইসিই’র একটি প্রসেসিং সেন্টার বিক্ষোভকারীদের টার্গেটে রয়েছে। বেশ কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিস ২৬ জনের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ, পুলিশ আক্রমণ ও গ্রেপ্তার প্রতিরোধসহ নানা অভিযোগে মামলা করেছে। ডিএইচএস জানায়, রোজ সিটি অ্যান্টিফা নামে সদ্য ঘোষিত একটি সংগঠন অবৈধভাবে আইসিই কর্মকর্তাদের ঠিকানা প্রকাশ করেছে এবং তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে কোনো দেশীয় সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণার বিধান নেই। এটি সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর (ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। তাছাড়া, সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। ফলে ওরেগনে সেনা পাঠানোর ক্ষেত্রেও আইনি বাধা সৃষ্টি হতে পারে। ওরেগনের সিনেটর রন ওয়াইডেন সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প হয়তো ২০২০ সালের খেলার পুনরাবৃত্তি করতে চাইছেন। আমি ওরেগনের জনগণকে অনুরোধ করছি সহিংসতায় প্ররোচিত না হতে। ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি সুজান বনামিচি অভিযোগ করেন, আইসিই এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করছে যারা সমাজের জন্য আসলেই হুমকি নয়। তিনি উদাহরণ দেন, একজন বাবাকে তার সন্তানের প্রিস্কুলের বাইরে থেকে তুলে নেওয়া হয় এবং এক দমকলকর্মীকে অগ্নি নির্বাপণের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে রিপাবলিকান নেতারা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। মার্কিন শ্রম সচিব লরি শ্যাভেজ-ডি রেমার বলেন, আইনশৃঙ্খলার অভাবে পোর্টল্যান্ড অপরাধপ্রবণ যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্পের পদক্ষেপের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

ট্রাম্পের এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রে সেনা মোতায়েনকে ঘিরে আবারও আইন ও রাজনীতির সংঘাত উসকে দিল। সমালোচকরা এটিকে অপ্রয়োজনীয় উস্কানি বলছেন, আর সমর্থকরা দেখছেন আইসিই এবং ফেডারেল স্থাপনাগুলো রক্ষার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হিসেবে। তবে চূড়ান্ত প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে পূর্ণ শক্তি ব্যবহারের অর্থ আসলে কী, এবং আইনের চোখে ট্রাম্পের এ নির্দেশ কতটা টিকে থাকবে?

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: